ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
প্রথমেই আমি রাজা জনক এবং মা সীতার পবিত্র ভূমি, মহান কবি বিদ্যাপতির জন্মস্থানকে প্রণাম জানাই। এই পবিত্র ভূমিকে যাঁরা সমৃদ্ধ করেছেন, তাঁদের শুভেচ্ছা জানাই।
বিহারের মাননীয় রাজ্যপাল শ্রী রাজেন্দ্র আরলেকরজি, শ্রদ্ধেয় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নীতীশ কুমারজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মীরা, বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রীরা শ্রী বিজয় কুমার সিনহা ও সম্রাট চৌধুরিজি, দারভাঙ্গার সাংসদ শ্রী গোপাল ঠাকুরজি, অনুষ্ঠানে অন্যান্য সাংসদ, বিধায়ক, সম্মানিত অতিথিবৃন্দ এবং আমার মিথিলার ভাই ও বোনেরা, আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাই!
বন্ধুগণ,
আজ প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ড রাজ্যে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিকশিত ঝাড়খণ্ড গড়ার লক্ষ্যে ঝাড়খণ্ডের মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। ঝাড়খণ্ডের প্রতিটি ভোটদাতার কাছে আমার আবেদন বিপুল সংখ্যায় আপনারা আপনাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করুন।
বন্ধুগণ,
আমি মিথিলা-কন্যা শারদা সিনহাজী প্রণাম জানাই। তাঁর মধুর কন্ঠ ভোজপুরী এবং মৈথিলী সঙ্গীতকে সমৃদ্ধ করেছে। বিশ্বজুড়ে ছট পুজো উপলক্ষে তাঁর গান সকলের কাছে পৌঁছয়।
বন্ধুগণ,
আজ বিহার সহ সারা দেশ এক অভূতপূর্ব উন্নয়নের সাক্ষী। এক সময় যে প্রকল্পগুলি নিয়ে শুধু আলোচনা হত, আজ সেগুলি বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমরা দ্রুত উন্নত ভারতের দিকে এগিয়ে চলেছি। এই রূপান্তরের যাত্রায় শরিক হতে পেরে আমাদের প্রজন্ম অত্যন্ত ভাগ্যবান।
বন্ধুগণ,
আমাদের সরকার দেশসেবায় নিয়োজিত। দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে চলেছে সর্বদা। সেবা করার অঙ্গীকার নিয়ে আমরা কাজ করি। আজ একটিমাত্র অনুষ্ঠানে ১২ হাজার কোটি টাকার একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হচ্ছে। সড়ক, রেল ও গ্যাস সংক্রান্ত পরিকাঠামোর এই প্রকল্পগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দারভাঙ্গায় এইমস গড়ে তোলা আরেকটি স্বপ্ন পূরণ। দারভাঙ্গার এইমস বিহারের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে। শুধুমাত্র মিথিলা, কোশী এবং ত্রিহুত অঞ্চলের মানুষই নন, পশ্চিমবঙ্গ সহ আশপাশের অঞ্চলের মানুষও উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেন। এছাড়াও, এই হাসপাতালে প্রতিবেশী নেপাল থেকেও রোগীরা আসবেন চিকিৎসা করাতে। এই প্রতিষ্ঠান কর্মসংস্থান এবং স্বনির্ভর হয়ে ওঠার প্রচুর সুযোগ তৈরি করবে। এই উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির জন্য আমি মিথিলা, দারভাঙ্গা সহ সমগ্র বিহারের জনসাধারণকে অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত যাঁরা নানাবিধ অসুখে অনেক সময়েই সমস্যার সম্মুখীন হন, চিকিৎসা করাতে গিয়ে নানা আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি হন। আমরা অনেকেই অত্যন্ত সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা। তাই, অসুখ একটি পরিবারের কতটা আর্থিক অনটনের কারণ হতে পারে, সে বিষয়ে আমরা প্রত্যেকেই ওয়াকিবহাল। অতীতে পরিস্থিতি অন্যরকমের ছিল। কম হাসপাতাল, কম চিকিৎসক, দামি ওষুধ এবং রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে যথাযথ পরিকাঠামোর অভাব ছিল। সেই সময় সরকার শুধু প্রতিশ্রুতিই দিত, কিন্তু কোন কিছুই কার্যকর করত না। বিহারে নীতীশজি ক্ষমতায় আসার আগে দরিদ্র মানুষের দুঃখ দূর করার কোনো চেষ্টাই ছিল না। জনগণ নীরবে রোগের কারণে কষ্ট ভোগ করতেন। এই পরিস্থিতিতে একটা দেশ কিভাবে উন্নতি করতে পারে? এক্ষেত্রে চিন্তাভাবনা এবং কাজ করার পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটানো প্রয়োজন।
বন্ধুগণ,
আমাদের সরকার দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে একটি সর্বাঙ্গীণ পরিবর্তন আনতে উদ্যোগী হয়েছে। আমরা প্রথমেই রোগ প্রতিরোধের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। এরপর, রোগ শনাক্তকরণের ওপর নজর দেওয়া হয়েছে। তৃতীয়ত, সকলে যাতে স্বল্পমূল্যে অথবা বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা ও ওষুধ পান, সেই বিষয়টির দিকে আমরা নজর দিয়েছি। চতুর্থত, ছোট ছোট শহরেও যাতে উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা করা যায়, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। পঞ্চমত, ডাক্তারদের ঘাটতি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে।
ভাই ও বোনেরা,
কোনো পরিবারই চায় না তার বাড়ির কোনো সদস্য অসুস্থ হোক। সুস্বাস্থ্যের জন্য সকলকে আয়ুর্বেদ এবং পুষ্টিকর খাবারের উপযোগিতা সম্পর্কে বোঝাতে হবে। ‘ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট’ সকলকে ফিট থাকার জন্য উৎসাহিত করে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, পচা খাবার এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনশৈলী অনেক অসুখের কারণ। আর তাই, স্বচ্ছ ভারত অভিযানের সূচনা করা হয়েছে, এর মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণ করা হচ্ছে। ঘরে ঘরে যাতে নলবাহিত বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছয়, সেই ব্যবস্থাও শুরু হয়েছে। এর ফলে, শহরগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন যেমন থাকবে, পাশাপাশি বড় অসুখও হবে না। আমি শুনেছি, দারভাঙ্গায় মুখ্য সচিবের ব্যক্তিগত উদ্যোগে গত ৩-৪ দিন ধরে পরিচ্ছন্নতা অভিযান করা হয়েছে। এর জন্য আমি তাঁকে, বিহার সরকারের প্রতিটি কর্মীকে এবং দারভাঙ্গার জনসাধারণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আগামী ৫-১০ দিন এই উদ্যোগ আপনারা বজায় রাখুন, সেই অনুরোধ করছি।
বন্ধুগণ,
অনেক অসুখেরই যদি প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করা যায় তাহলে ভয়ের কোনো কারণ থাকে না। কিন্তু রোগ নির্ণয়ের জন্য বেশি অর্থ ব্যয়ের কারণে মানুষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান না। এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে আমরা দেশজুড়ে ১.৫ লক্ষ আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির গড়ে তুলেছি। এই কেন্দ্রগুলি ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিসের মতো বিভিন্ন অসুখকে প্রাথমিক স্তরেই চিহ্নিত করতে সাহায্য করে।
বন্ধুগণ,
আয়ুষ্মান ভারত যোজনায় দেশজুড়ে ৪ কোটির বেশি দরিদ্র মানুষ চিকিৎসা পরিষেবার সুযোগ পেয়েছেন। এই প্রকল্প না থাকলে এঁদের মধ্যে বেশিরভাগই হাসপাতালেও চিকিৎসা করাতে পারতেন না। এনডিএ সরকারের এই উদ্যোগ বহু মানুষকে অর্থ সঙ্কটের হাত থেকে বাঁচিয়েছে। এই পরিষেবার সুযোগ সরকার এবং বেসরকারি – দু’ধরনের হাসপাতাল থেকেই পাওয়া যায়। আয়ুষ্মান যোজনার কারণে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি সাশ্রয় হয়েছে। আজ যদি সরকার ঘোষণা করত যে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করা হবে, সেটি হয়তো এক মাস ধরে সংবাদ শিরোনামে স্থান পেত। কিন্তু, এই প্রকল্পটি আমাদের নাগরিকদের নীরবে সহায়তা করেছে।
ভাই ও বোনেরা,
নির্বাচনের সময় আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, সত্তরোর্ধ প্রতিটি নাগরিককে আয়ুষ্মান যোজনার আওতায় নিয়ে আসা হবে। সেই প্রতিশ্রুতি আমি রেখেছি। বিহারেও আমরা ৭০ বছরের ওপরে প্রতিটি নাগরিক, তাঁর পারিবারিক রোজগার যাই হোক না কেন, তাঁদের সকলকে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা করেছি। খুব শীঘ্রই সমস্ত প্রবীণ নাগরিক আয়ুষ্মান বয়ো বন্দনা কার্ড পাবেন। এছাড়াও, জন-ওষধি কেন্দ্র থেকে ব্যয়সাশ্রয়ী মূল্যে ওষুধ পাওয়া যায়।
বন্ধুগণ,
উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য আমাদের চতুর্থ উদ্যোগ হল দেশের ছোট ছোট শহরে উন্নত মানের চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা করা। স্বাধীনতার ৬০ বছর পরে দেশে মাত্র একটি এইমস ছিল – দিল্লিতে। যাঁরা জটিল অসুখে ভুগছেন, তাঁদের দিল্লিতে গিয়ে এইমস-এ চিকিৎসা করানো ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। কংগ্রেস সরকার অবশ্য ঘোষণা করেছিল আরও ৪-৫টি এইমস তৈরি করা হবে। কিন্তু সেই ঘোষণা বাস্তবায়িত হয়নি। আমাদের সরকার দেশজুড়ে নতুন নতুন এইমস তৈরি করেছে। আজ ভারতে দু’ডজনের বেশি এইমস তৈরি হয়েছে। গত দশকের তুলনায় এই দশকে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে, আরও বেশি সংখ্যায় চিকিৎসক কাজ করছেন। প্রতি বছর বিহার থেকে অনেক তরুণ চিকিৎসক দারভাঙ্গা এইমস থেকে পাশ করে বেরিয়ে আসবেন। আমরা এক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগে ডাক্তার হতে গেলে ইংরেজি জানা বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু, দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েরা তাহলে কি করবেন? যাঁরা ইংরেজি জানে না, তাঁরা কি করে স্বপ্ন পূরণ করবেন? আমাদের সরকার ডাক্তারি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং-এ মাতৃভাষায় পঠনপাঠনের সুযোগ এনে দিয়েছে। এই সংস্কার কর্পুরী ঠাকুরজিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি মাতৃভাষায় ডাক্তারি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানোর কথা বলতেন। আমরা তাঁর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেছি। গত ১০ বছরে ১ লক্ষ ডাক্তারির আসন যুক্ত হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে আমরা আরও ৭৫ হাজার আসন যুক্ত করব। এছাড়াও, আমাদের সরকার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে বিহারের যুব সম্প্রদায় উপকৃত হবে। ডাক্তারি হিন্দি সহ অন্যান্য ভারতীয় ভাষাতেও পড়ার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। ফলস্বরূপ, দরিদ্র, দলিত, সমাজের পিছিয়ে পড়া এবং আদিবাসী সমাজের থেকে উঠে আসা ছেলে-মেয়েরা চিকিৎসক হতে পারবেন।
বন্ধুগণ,
আমাদের সরকার ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। বিহারের মুজফফরপুরে যে ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে, তার ফলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। এখানে এক ছাদের তলায় ক্যান্সারের সব ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবে। ফলে, কাউকে আর দিল্লি কিংবা মুম্বাইয়ে চিকিৎসার জন্য যেতে হবে না। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে বিহারে একটি অত্যাধুনিক চক্ষু হাসপাতাল গড়ে উঠছে। দিন কয়েক আগে আমি যখন কাশীতে ছিলাম তখন মঙ্গলজি আমাকে জানান, কাঞ্চি কামাকোটির শঙ্করাচার্যজির আশীর্বাদে এখানে একটি উন্নতমানের চক্ষু হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। কাশীর এই হাসপাতাল গুজরাটের মডেল অনুসরণ করে তৈরি হয়েছে। আমি যখন গুজরাটের দায়িত্বে ছিলাম, সেই সময় গুজরাটে এই হাসপাতালটি হয়। এই হাসপাতালগুলির আদর্শে যাতে আরও হাসপাতাল তৈরি করা যায়, তার জন্য আমি অনুরোধ জানাই। আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমার সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীজি যেমনটা জানালেন, এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত বাস্তবায়িত হচ্ছে। নতুন এই হাসপাতাল এই অঞ্চলের মানুষের জন্য সুফল বয়ে নিয়ে আসবে।
বন্ধুগণ,
বিহারেরে নীতীশ বাবুর নেতৃত্বে যে সরকার চলছে তা এক উদাহরণের সৃষ্টি করছে। বিহারে জঙ্গল রাজের অবসান ঘটাতে তাঁর উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এনডিএ-এর ডবল ইঞ্জিন সরকার রাজ্যের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বমানের পরিকাঠামো এই অঞ্চলের ক্ষুদ্র কৃষক এবং স্থানীয় শিল্প সংস্থাগুলিকে সহায়তা করছে। আজ বিহারে বিমানবন্দর, এক্সপ্রেসওয়ের মতো বিভিন্ন পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। উড়ান যোজনার আওতায় দারভাঙ্গায় বিমানবন্দর গড়ে উঠেছে। এখান থেকে দিল্লি এবং মুম্বাইয়ে সরাসরি যাওয়া যাচ্ছে। খুব শীঘ্রই রাঁচির জন্য একটি বিমানের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। ৫,৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আমাস-দারভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। এছাড়াও, ৩,৪০০ কোটি টাকার সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন প্রকল্পের শিলান্যাস করা হল। জলের মতোই এই গ্যাসও লোকের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে এবং এর জন্য খরচ হবে অত্যন্ত কম। এই গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি বিহারের পরিকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়েছে এবং বহু কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে।
বন্ধুগণ,
দারভাঙ্গা “পাগ-পাগ পোখারি মাচ মাখান, মধুর বোল মুসকি মুখ পান” হিসেবে পরিচিত। আমাদের সরকার কৃষক, মাখানা উৎপাদন এবং মৎস্যজীবীদের উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়েছে। পিএম কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পে বিহারের কৃষকরা ২৫ হাজার কোটি টাকা পেয়েছেন। মিথিলার কৃষকরাও এর ফলে উপকৃত হয়েছেন। ‘এক জেলা এক পণ্য’ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় মাখানা উৎপাদকরা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তাঁদের পণ্য বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন। মাখানা গবেষণা কেন্দ্রটি জাতীয় স্তরে উন্নীত হয়েছে। এছাড়াও, জিআই ট্যাগ পেয়েছে। একইভাবে মৎস্য সম্পদ যোজনার আওতায় আমরা মৎস্যজীবীদের প্রতিটি স্তরে সহায়তা করছি। এখন মৎস্যজীবীরা কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পাচ্ছেন। পিএম মৎস্য সম্পদ যোজনার আওতায় মৎস্যজীবীদের সহায়তা করা হচ্ছে। ভারত যাতে প্রথম সারির মৎস্য রপ্তানিকারক রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। দারভাঙ্গার মৎস্যজীবীরাও এর ফলে উপকৃত হবেন।
বন্ধুগণ,
কোশী এবং মিথিলার বন্যা সমস্যার সমাধান করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। বিহারের বন্যা সমস্যার নিরসনে এ বছরের বাজেটে একটি সর্বাঙ্গীণ পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। নেপালের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা একটি চিরস্থায়ী সমাধানসূত্র খুঁজে পাব বলে আশাবাদী। আমাদের সরকার ১১ হাজার কোটি টাকা এর জন্য বিনিয়োগ করবে।
বন্ধুগণ,
ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের কেন্দ্রে রয়েছে বিহার। সেই ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য। এনডিএ সরকার উন্নয়নের পাশাপাশি ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আজ নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় তার অতীতের গৌরব পুনরুদ্ধার করছে।
বন্ধুগণ,
বৈচিত্র্যপূর্ণ আমাদের দেশে অনেক ভাষা রয়েছে যেখানে ঐতিহ্যের বিভিন্ন গুপ্তধন লুকিয়ে আছে। এই ভাষাগুলিতে কথা বলাই শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেগুলি রক্ষা করাও আমাদের কাজ। সম্প্রতি আমরা পালি ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছি। ভগবান বুদ্ধের বাণী পালি ভাষায় রচিত। এই ঐতিহ্য আমাদের তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হবে। এই প্রসঙ্গে আমি মনে করিয়ে দিতে চাই, এনডিএ সরকারই সংবিধানের অষ্টম তপশিলে মৈথিলী ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ঝাড়খণ্ডে মৈথিলীকে দ্বিতীয় রাজ্য ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
বন্ধুগণ,
মিথিলা অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সর্বত্র অনুভূত হয়। মা সীতার আশীর্বাদধন্য এই অঞ্চল। এনডিএ সরকার রামায়ণ সার্কিটের আওতায় দেশের এক ডজন শহরকে যুক্ত করেছে। এর মধ্যে আমাদের দারভাঙ্গাও রয়েছে। এর ফলে এখানকার পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটবে। পাশাপাশি, অমৃত ভারত ট্রেন পরিষেবা দারভাঙ্গা-সীতামাঢ়ী-অযোধ্যা রুটের জনসাধারণের উপকারে আসবে।
বন্ধুগণ,
আজ আমি আপনাদের যা বলছি, এর পেছনে দারভাঙ্গা রাজ্যের মহারাজা কামেশ্বর সিং-জির গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ভারতের উন্নয়নে তাঁর অঙ্গীকার স্বাধীনতার আগে ও পরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমার সংসদীয় কেন্দ্র কাশীতেও তাঁকে যথেষ্ট সম্মান করা হয়। মহারাজা কামেশ্বর সিং-জির সমাজসেবা দারভাঙ্গার জন্য গর্বের বিষয়। আমাদের সকলের কাছে তিনি অনুপ্রেরণার উৎস।
বন্ধুগণ,
বিহারের মানুষের প্রতিটি আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে কেন্দ্রে আমার সরকার এবং এখানে নীতীশজির নেতৃত্বে বিহার সরকার ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে চলেছে। আমাদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক এবং কল্যাণ প্রকল্পের সুফল যাতে বিহারের জনসাধারণ সবথেকে বেশি পান, তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দারভাঙ্গায় এইমস সহ অন্যান্য উন্নয়নমুখী প্রকল্পের জন্য আমি আরও একবার আপনাদের অভিনন্দন জানাই। আগামী নির্মাণ পর্বের শুভেচ্ছা রইল। আসুন, আমরা একসঙ্গে সবাই বলি –
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
অনেক ধন্যবাদ