গায়ানার জর্জটাউনে আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় সম্প্রদায়ের সামনে ভাষণ দেন। গায়ানার প্রেসিডেন্ট ডঃ ইরফান আলি, প্রধানমন্ত্রী মার্ক ফিলিপস্, ভাইস প্রেসিডেন্ট ভরত জাগদেও সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রেসিডেন্ট ইরফান আলিকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের হৃদয়ে আতিথেয়তার অনুভূতি সর্বদা বিরাজমান। ভারত সরকারের ‘এক পেড় মা কে নাম’ উদ্যোগের অঙ্গ হিসেবে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একটি গাছও রোপণ করেন শ্রী মোদী।
গায়ানার সর্বোচ্চ জাতীয় সম্মান পেয়ে তিনি অত্যন্ত গর্ববোধ করছেন বলে মন্তব্য করেন শ্রী মোদী। গায়ানায় বসবাসরত ৩ লক্ষ ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং ১৪০ কোটি ভারতবাসীর উদ্দেশে তিনি এই সম্মান উৎসর্গ করেন। শ্রী মোদী বলেন, ভারতের বিভিন্ন অংশের মানুষ এখানে এসেছেন এবং ভারতের সংস্কৃতি, ভাষা ও পরম্পরার বৈচিত্র্য তাঁরা ছড়িয়ে দিয়েছেন। এই ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য আজ গায়ানার সমৃদ্ধ সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সংস্কৃতি, রন্ধনশৈলী এবং ক্রিকেট – এই তিনটি ক্ষেত্র ভারত ও গায়ানার মধ্যে সম্পর্কের মজবুত ভিত্তি তৈরি করেছে। গায়ানার প্রভিডেন্স ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম দু’দেশের বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি কালীচরণ, চন্দ্রপলের মতো ক্রিকেটারদের কথা উল্লেখ করেন। সেইসঙ্গে, ভারতে ক্লাইভ লয়েড ও তাঁর দলের জনপ্রিয়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে গায়ানার সংসদে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি ভারতকে গণতন্ত্রের জননী হিসেবে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে গত এক দশকে ভারতের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মাত্র ১০ বছরে ভারত বিশ্বের দশম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ থেকে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। খুব শীঘ্রই ভারত তৃতীয় বৃহত্তম দেশ হয়ে উঠবে। তরুণদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, তাঁদের জন্যই ভারত স্টার্টআপ পরিমণ্ডলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
এছাড়াও ই-বাণিজ্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ফিনটেক, কৃষি প্রযুক্তি সহ অন্যান্য বিষয় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে উঠে আসে। মোবাইল উৎপাদনে ভারত দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, ৫০ কোটি গরীব মানুষের জন্য ব্যাঙ্কের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে এবং এইসব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ডিজিটাল পরিচয় ও মোবাইল নম্বর। গত এক দশকে ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য সীমার ওপরে তুলে আনার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়াও তাঁর ভাষণে উঠে আসে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথাও। এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সৌর জোট, আন্তর্জাতিক জৈব জ্বালানি জোট প্রভৃতির কথা উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, শক্তি থেকে শিল্পোদ্যোগ, আয়ুর্বেদ থেকে কৃষি, পরিকাঠামো থেকে উদ্ভাবন, স্বাস্থ্য পরিচর্যা থেকে মানবসম্পদ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারে দুই দেশ একমত হয়েছে। ভারতকে সম্ভাবনার দেশ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। জানুয়ারি মাসে ভুবনেশ্বরে অনুষ্ঠিত হবে প্রবাসী ভারতীয় দিবস। সেখানে প্রবাসী ভারতীয়দের যোগদানের জন্য আর্জি জানান প্রধানমন্ত্রী।